ষাট গম্বুজ মসজিদ - Shat Gombuj Masjid



ষাট গম্বুজ মসজিদ (Shat Gombuj Masjid) বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক মসজিদ। এটি ১৫শ শতাব্দীতে খান জাহান আলী কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল এবং এটি বাংলাদেশের তিনটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের একটি।  

স্থাপত্যশৈলী ও বৈশিষ্ট্য

গম্বুজ ও স্তম্ভ: যদিও নাম "ষাট গম্বুজ", মসজিদটিতে মোট ৮১টি গম্বুজ রয়েছে। এর মধ্যে ৭৭টি অর্ধগোলাকার এবং ৪টি কোণায় অবস্থিত মিনারের উপর। মসজিদের ছাদ ৬০টি পাথরের স্তম্ভের উপর নির্মিত, যা গম্বুজগুলিকে ধারণ করে।  

দরজা ও মিনার: পূর্ব দেয়ালে ১১টি খিলানযুক্ত দরজা রয়েছে, যার মধ্যে মাঝেরটি সবচেয়ে বড়। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে ৭টি করে দরজা রয়েছে। মসজিদের চার কোণায় ৪টি মিনার রয়েছে, যেগুলোর উপরে গম্বুজ রয়েছে।  

অভ্যন্তরীণ বিন্যাস: মসজিদের ভিতরে ৬ সারিতে ১০টি করে মোট ৬০টি পাথরের স্তম্ভ রয়েছে। এই স্তম্ভগুলির উপর গম্বুজগুলি নির্মিত হয়েছে।  

ঐতিহাসিক গুরুত্ব

ষাট গম্বুজ মসজিদ শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এটি মধ্যযুগীয় বাংলার সুলতানি স্থাপত্যশৈলীর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মসজিদটি একটি বৃহৎ কমপ্লেক্সের অংশ, যার মধ্যে একটি মাদ্রাসা ও খান জাহান আলীর সমাধি রয়েছে।  

অবস্থান ও দর্শনীয় স্থান

মসজিদটি বাগেরহাট শহর থেকে প্রায় ৩ মাইল (প্রায় ৫ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত। মসজিদের পাশেই রয়েছে 'ঘোড়া দীঘি', যা খান জাহান আলীর সময়ে খনন করা হয়েছিল।  

ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য

১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো ষাট গম্বুজ মসজিদকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এটি বাংলাদেশের তিনটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের একটি।  

ষাট গম্বুজ মসজিদ তার স্থাপত্যশৈলী, ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের কারণে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়। 

বাংলাদেশের তিনটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হলো:

1. ষাট গম্বুজ মসজিদ (Shat Gombuj Mosque)
অবস্থান: বাগেরহাট
ইউনেস্কো স্বীকৃতি: ১৯৮৫ সাল
বৈশিষ্ট্য: মধ্যযুগীয় সুলতানি স্থাপত্যশৈলী, বহু গম্বুজ ও পাথরের স্তম্ভ, খান জাহান আলীর সময়কালের নিদর্শন।

2. সুন্দরবন (The Sundarbans)
অবস্থান: খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা জুড়ে বিস্তৃত
ইউনেস্কো স্বীকৃতি: ১৯৯৭ সাল
বৈশিষ্ট্য: বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও নানা বিরল প্রাণীর আবাসস্থল।

3. মাহাস্থানগড় ও পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার (Ruins of the Buddhist Vihara at Paharpur)
অবস্থান: নওগাঁ জেলা, পাহাড়পুর
ইউনেস্কো স্বীকৃতি: ১৯৮৫ সাল
বৈশিষ্ট্য: প্রাচীন সোমপুর মহাবিহার, পাল রাজাদের শাসনামলের গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র।
Previous Post Next Post