বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার কুসুম্বা মসজিদ - Kushumba Mosjid in Bangladesh



কুসুম্বা মসজিদ বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা গ্রামের একটি প্রাচীন মসজিদ। কুসুম্বা দিঘির পশ্চিম পাড়ে, পাথরের তৈরি ধূসর বর্ণের মসজিদটি অবস্থিত। বাংলাদেশের পাঁচ টাকার নোটে এই মসজিদের ছবি দেওয়া আছে।

ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
জেলানওগাঁ
অঞ্চলরাজশাহী
মালিকানাবাংলাদেশ সরকার
পবিত্রীকৃত বছর১৫৫৮-১৫৫৯ খ্রিষ্টাব্দ
অবস্থান
অবস্থানবাংলাদেশ মান্দানওগাঁরাজশাহীবাংলাদেশ
দেশবাংলাদেশ
কুসুম্বা মসজিদ বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
কুসুম্বা মসজিদ
মানচিত্রে মসজিদের অবস্থান
প্রশাসনবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৪.৭৫৩৭৫৩° উত্তর ৮৮.৬৮১২৪৭° পূর্ব
স্থাপত্য
ধরনমসজিদ
স্থাপত্য শৈলীইসলামিক স্থাপত্য
সৃষ্টিকারীসবরখান বা সোলায়মান
বিনির্দেশ
দৈর্ঘ্য৫৮ ফুট (১৮ মিটার)
প্রস্থ৪২ ফুট (১৩ মিটার)
গম্বুজসমূহ
মিনার
উপাদানসমূহপাথরইট, রড

ইতিহাস :

মসজিদের প্রবেশদ্বারে বসানো ফলকে মসজিদের নির্মাণকাল লেখা রয়েছে হিজরি ৯৬৬ সাল(১৫৫৮-১৫৬৯ খ্রিষ্টাব্দ)।[] আফগানি শাসনামলের শুর বংশের শেষদিকের শাসক গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের আমলে[] সুলায়মান নামে একজন এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।

১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মসজিদের তিনটি গুম্বজ নষ্ট হয়েছিল। পরে সেগুলো প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সংস্কার করেন।[] পরবর্তীতে ২০১৭ সালে মসজিদের চতুর্দিকে এবং পূর্বপার্শ্বে অবস্থিত দিঘির পাড়ে ফুলের বাগান নির্মাণ, আলোকসজ্জার কাজ করা হয়।[]

বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে রাজশাহী জেলা পরিষদের ওভারশিয়ার সুরেন্দ্র মোহন চৌধুরী কুসুম্বা গ্রামের প্রাচীন ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি শিলালিপি আবিষ্কার করেন। শিলালিপিটি বর্তমানে রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘরে রয়েছে।


মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ৫৮ফুট, প্রস্থে ৪২ফুট। দুই সারিতে ৬টি গোলাকার গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের গায়ে রয়েছে লতাপাতার নকশা। প্রাচীর ঘেরা মসজিদটির প্রধান ফটকে প্রহরী চৌকি ছিল। মসজিদটিতে ইটের গাঁথুনি, সামান্য বাঁকানো কার্ণিশ এবং সংলগ্ন আটকোণা বুরুজ। এগুলো থেকে মসজিদের স্থাপত্যে বাংলা স্থাপত্যরীতির প্রভাব পাওয়া যায়।[] মসজিদের মূল গাঁথুনি ইটের হলেও এর সম্পূর্ণ দেয়াল এবং ভেতরের খিলানগুলো পাথরের আস্তরণে ঢাকা। মসজিদের স্তম্ভ, ভিত্তি মঞ্চ, মেঝে ও দেয়ালের জালি নকশা পর্যন্ত পাথরের। মসজিদটি আয়তাকার এবং এতে রয়েছে তিনটি বে এবং দুটি আইল। এর পূর্বপ্রান্তে তিনটি এবং উত্তর-দক্ষিণে একটি করে প্রবেশপথ। মসজিদের কেন্দ্রীয় মিহরাবটি পশ্চিম দিকের দেয়ালের থেকে আলাদা। পশ্চিম দেয়ালের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং মাঝামাঝি প্রবেশপথ বরাবর দুটো মিহরাব রয়েছে যা মেঝের সমান্তরাল।[][] উত্তর-পশ্চিম কোণের বে-তে মিহরাবটি একটি উঁচু বেদীর উপর বসানো। মোট মিহরাব আছে ৩টি, যার সবগুলো কালো পাথরের তৈরি। মসজিদটির সম্মুখে ২৫.৮৩ একের আয়তনের একটি বিশাল জলাশয় রয়েছে। মিহরাবে আঙ্গুরগুচ্ছ ও লতাপাতার নকশা খোদিত রয়েছে।[][]

মসজিদের ভিতরে উত্তর-পশ্চিম কোনের স্তম্ভের উপর একটি উঁচু আসন আছে। ধারণা করা হয়, এই আসনে বসেই তৎকালীন কাজী/বিচারকরা এলাকার বিভিন্ন সমস্যার বিচার কার্য পরিচালনা করতেন।[]

Previous Post Next Post